সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহার করে সমাজ ও রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের ধারাবাহিক অপচেষ্টার অংশ হিসেবে এবার গুজব রটানো হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক সফল অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও তার পরিবার নিয়ে। অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী এক ব্যক্তি ফেসবুকে সাবেক অর্থমন্ত্রীকে নিয়ে গুজব ছড়িয়েছেন। অপপ্রচার রটিয়ে বলা হচ্ছে, সাবেক এই মন্ত্রীকে তার নিজের বাড়িতে উঠতে দিতে চাইছেন না ছেলে শাহেদ মুহিত। বিষয়টি পুরোপুরি গুজব ও মিথ্যাচার বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজনরা।
সাবেক অর্থমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ এবং বর্তমান ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এসব গুজবে কান না দেওয়ার জন্য দেশবাসীকে পরামর্শ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহ বিডি নিউজ২৪ কে – তিনি বলেন, ‘সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সম্পর্কে ফেসবুকে যে মুখরোচক বানোয়াট গল্প ছড়ানো হয়েছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। ব্যক্তিগতভাবে আমি তার ও তাদের পরিবার সম্পর্কে জানি বলেই এমনটা বলেছি। গল্পটি ফেসবুকে অনেক লাইক-শেয়ার পেয়েছে। আমাদের চিন্তাভাবনা আর গুজব রটনাকারীদের পারিবারিক চিন্তাভাবনার মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। তাই তারা এ ধরনের গল্প পড়ে মজা পায়, আনন্দ পায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘উনার (আবুল মাল আবদুল মুহিত) বাড়ি কিন্তু ধানমন্ডি না বনানীতে। তিনি কখনও ধানমন্ডিতে ছিলেনও না। তিনি বর্তমানে তার ছেলে ও পুত্রবধূসহ পুরো পরিবার নিয়ে রাজধানীর বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যভিনিউতে থাকেন। এর আগে তিনি গুলশান-২ নম্বরে বসবাস করতেন। পরিবারের সবার সঙ্গেও দারুণ হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক সাবেক এই মন্ত্রীর। মুহিত সাহেবের সঙ্গে আমার পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। আমি নিজেই সাবেক অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। খোঁজ নিয়ে জেনেছি যে, তাদের পরিবারের এই ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। পুত্রবধূকে তিনি সব সময়ই তার মেয়ের মতো স্নেহ করেন এবং তার পুত্রবধূ মানতাহাও তাকে বাবার মতোই সম্মান ও শ্রদ্ধা করেন। উনার খাবার ও ওষুধ পুত্রবধুই দিয়ে থাকেন। উনার এক ভাই বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সাহায্য নেওয়ার জন্য উনার অন্য কাউকে দরকার হয় না। আর বনানীর বাড়িতে না উঠতে পারলেও ওনাকে বৃদ্ধাশ্রমে উঠতে হবে পরিস্থিতি এমন নয়।’
মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘পারিবারিকভাবেই উনাদের সিলেটে বেশ সম্পদ রয়েছে। শুধু গুজব রটনাকারীদের কথিত ধানমণ্ডির ওই বাড়ি দখল করলে বরং উনার ছেলের লোকসান হওয়ার কথা। তাছাড়া উনার ছেলে শাহেদ সাহেবও উনার সঙ্গে সরকারি বাড়িতেই থাকতেন। কাজেই বিষয়টি সম্পূর্ণ অপপ্রচার ও বানোয়াট। এর মাধ্যমে একজন সম্মানী ব্যক্তির সম্মান নষ্ট করে জাতি হিসেবে আমরা নিজেদেরকে চিন্তা- চেতনা-সংস্কৃতিগতভাবে কোথায় নিয়ে যাচ্ছি।’
সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের পরিবার নিয়ে ছড়ানো গুজবের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এ ধরনের সংবাদ সম্পূর্ণই গুজব। বিভিন্ন সময়ে সরকারের বর্তমান ও সাবেক মন্ত্রী এবং এমপিদের ব্যাপারে গুজবের ঘটনা এটাই প্রথম নয়। কোনো একটি চক্র ক্রমাগতভাবে এই গুজব ছড়িয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এই অপপ্রচার নতুন কিছু নয়। তবে এই করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এমন একজন বয়োজ্যেষ্ঠ বিশিষ্ট ব্যক্তিকে নিয়ে যারা অপপ্রচার করতে পারে, তাদের আসলে কোন নামে সংজ্ঞায়িত করা যায়- আমার জানা নেই। এরা মানুষ হওয়ারই যোগ্য নয়।’ ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী এসব গুজব ও অপপ্রচার থেকে সতর্ক থাকতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান এবং যারা এসব ছড়াচ্ছে তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনারও আহ্বান জানান।