ময়মনসিংহ বিডি নিউজ২৪
আজ অমর একুশে ফেব্রুয়ারি, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে যথাযোগ্য মর্যাদা ও বিনম্র শ্রদ্ধার সহীত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে সকল ভাষা শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে ফুলবাড়ীয়া উপজেলা আওয়ামীলীগ সহ সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ।
দিনের শুরুতেই ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামীলীগের সম্মানিত সদস্য ও ফুলবাড়ীয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব এডভোকেট ইমদাদুল হক সেলিম ও ফুলবাড়ীয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সফল সম্মানিত সভাপতি,তরুণ আওয়ামীলীগ নেতা জনাব মোঃ হারুন অর রশিদ এর নেতৃত্বে সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীর মাঝে কালো ব্যাজ ধারণ করে প্রভাতফেরী সহকারে ফুলবাড়ীয়া উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ফুলবাড়ীয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয় থেকে প্রভাতফেরী শুরু করে শহীদ মিনারে যান আওয়ামীলীগ সহ সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ।
এ সময় ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ গানের সুর বাজতে থাকে। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থেকে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এ সময় ফুলবাড়ীয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ রাজ্জাক ও যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক কে বি এম আমিনুল ইসলাম খাইরুল ও প্রচার সম্পাদক ওয়াদুদ আকন্দ দুদ সহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামীলীগের সম্মানিত সদস্য আলহাজ্ব এডভোকেট ইমদাদুল হক সেলিম বলেন, ‘একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবসে সকল ভাষা শহীদদের প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা। একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালির চির প্রেরণার প্রতীক। একুশে ফেব্রুয়ারির রক্তঝরা পথ বেয়েই শৃঙ্খলমুক্ত হয়েছিল দুঃখিনী বর্ণমালা, মায়ের ভাষা। এদিন মাতৃভাষার মর্যাদা রাখতে গিয়ে বুকের রক্ত ঢেলে বাঙালি জাতি যে ইতিহাস রচনা করেছিল, তা শুধু বাংলাদেশ নয়, সারাবিশ্ব তাকে বরণ করেছে সুগভীর শ্রদ্ধায়। সেদিন রক্তে কেবল ভাষার অধিকার অর্জিত হয়নি, স্বাধীনতার বীজও রোপিত হয়েছিল। যার ফল আসে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন।’
ফুলবাড়ীয়া থানা কমিনিটি পুলিশিং কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও তরুণ আওয়ামীলীগ নেতা জনাব মোঃ হারুন অর রশিদ বলেন, ‘১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রক্তাক্ত ত্যাগের মহিমায় বাঙালি জাতি খুঁজে পায় তার নিজস্ব জাতিসত্তা, স্বকীয়তা ও সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য। এদিন মায়ের ভাষার অধিকারের জন্য নিজেদের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন বাঙালি জাতির সূর্য সন্তানেরা। অমর একুশের পথ ধরেই উন্মেষ ঘটেছিল বাঙালির স্বাধিকার চেতনার। অমর একুশের অবিনাশী চেতনাই আমাদের যুগিয়েছে অফুরন্ত প্রেরণা ও অসীম সাহস এবং বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশের যে সংগ্রামের সূচনা সেদিন ঘটেছিল, ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় পথ বেয়ে, স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের মধ্য দিয়ে তা চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে।’
রক্ত দিয়ে কেনা এই বুলি। পৃথিবীর সবচেয়ে দামি আমার মাতৃভাষা। রক্তস্নাত সেই অমর একুশে ফেব্রুয়ারি আজ। বাঙালি জাতির শোকের ও গৌরবের দিন। রক্তের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
দিবসটি আজ শুধু বাঙালির নয়, পৃথিবীর সব ভাষাভাষী মানুষের। পৃথিবীর কয়েক হাজার ভাষাভাষী মানুষও দিনটি শ্রদ্ধাভরে পালন করছেন। ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে প্রস্তাব উত্থাপন করা হয় ও এতে ১৮৮টি দেশ সমর্থন জানালে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ২০০০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে দিবসটি জাতিসঙ্ঘের সদস্যদেশসমূহে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে।
কিন্তু বাংলাদেশের কাছে এর আবেদন অন্যরকম। রক্তস্নানের মধ্য দিয়ে ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার দিন।
ভাষা আন্দোলন দমন করতে ১৯৫২ সালের আজকের এই দিনে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকার ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে। ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল করেন। সেই মিছিলে গুলি চলে। গুলিতে শহীদ হন সালাম, রফিক, বরকত, জব্বার। তাঁদের স্মরণেই দেশবাসী এই শহীদ মিনারের সামনে এসে বিনম্র শ্রদ্ধা জানায়।