৬ জুন ২০২১ তারিখ সকাল ৮.০০ টার দিকে সন্দ্বীপ থেকে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের কুমিরার উদ্দেশ্যে স্পিডবোটে করে রওনা করেন পাঁচ যাত্রী। সন্দ্বীপ থেকে সাগর পথে কুমিরার দূরত্ব প্রায় ৪০ কি:মি:।
তারা যখন সন্দ্বীপ থেকে রওনা হয়েছিলেন তখন আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকলেও কিছুদূর যাবার পর হঠাৎ করে আবহাওয়ার রূপ পাল্টাত থাকে। বাতাসের বেগ বাড়তে শুরু করে, সাথে উত্তাল হতে থাকে সাগরের ঢেউ। কিছুক্ষনের মধ্যেই সেই বাতাস রূপ নেয় ঝড়ের। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে ঝড়ের ভয়াবহতা।
প্রচন্ড ঝড়ের মধ্যে স্পিডবোট চালক প্রাণপনে স্পিডবোটের নিয়ন্ত্রন ধরে রাখতে চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু এক পর্যায়ে তিনি আর নিয়ন্ত্রন ধরে রাখতে পারছিলেন না। ফলে প্রচন্ড ঝড়ের কবলে পড়ে উত্তাল ঢেউয়ের তোড়ে স্পিডবোটটি নিয়ন্ত্রন হারিয়ে সাগরের বুকে এদিক ওদিক ভাসতে থাকে। এর মধ্যেও স্পিডবোট চালক প্রাণপন চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন যাতে কোনোভাব স্পিডবোট ডুবে না যায়।
এভাবে প্রবল ঝড়ের সাথে লড়াই করে কেটে যায় দীর্ঘ সময়। তারপর এক পর্যায়ে ঝড়ের বেগ কমতে থাকে। ঝড় যখন পুরোপুরি থেকে যায় তখন তারা বুঝতে পারছিলেন না যে তারা কোথায় আছেন। কিছুক্ষন এদিক সেদিক ঘোরাঘুরি করে যখন তারা দিক ঠিক করতে পারছিলেন না তখন তারা আবার ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন।
এভাবে চলতে চলতে প্রায় ৯.৩০ টার দিকে স্পিডবোটে থাকা যাত্রীদের মধ্য হতে মাহমুদুল নামের এক ব্যক্তি ৯৯৯ নম্বরে কল করে তাদের বিপদের কথা জানান এবং দ্রুত তাদেরকে উদ্ধার করতে অনুরোধ করেন। ৯৯৯ অপারেটর সাথে সাথে বিষয়টি কোস্টগার্ড হেডকোয়ার্টার্সের নিয়ন্ত্রন কক্ষে এবং চট্টগ্রাম কোস্টগার্ডের নিয়ন্ত্রন কক্ষে জানান এবং ভিকটিমদের সাগর হতে উদ্ধার করতে দ্রুত টিম পাঠাতে অনুরোধ করে।
৯৯৯ এর তথ্য পেয়ে সন্দ্বীপ কোস্টগার্ডের একটি উদ্ধারকারী দল তাৎক্ষনিক তাদের উদ্ধার করতে রওনা হয়ে যায়। দলটি স্পিডবোটের প্রাথমিক গতিপথ, যাত্রার সময়, ঝড়ের প্রকৃতি ও সময়, ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়ে সম্ভাব্য সকল দিকে খুঁজতে থাকে। বিভিন্ন দিকে খুঁজতে খুঁজতে একপর্যায়ে তারা দিকভ্রান্ত স্পিডবোটটিকে সনাক্ত করতে সমর্থ হয়। তারপর তাদেরকে পথ দেখিয়ে নিরাপদে উপকূলে নিয়ে আসে। চালক এবং যাত্রী সকলেই সুস্থ আছেন।