MYMENSINGH BD NEWS24 :
বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় কবিদের মধ্যে একজন। তিনি ১৯৪৫ সালে নেত্রকোণার বারহাট্টার কাশবন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার ছেলেবেলা কাটে নেত্রকোণার বারহাট্টা উপজেলার কাশবনে। তার পিতার নাম সুখেন্দু প্রকাশ গুণ এবং মাতা বীণাপাণি। সুখেন্দু ও বীণাপাণির তিন মেয়ে এবং দুই ছেলের মধ্যে নির্মলেন্দু ছোট। চার বছর বয়সে মাতার মৃত্যুর পর তার পিতা চারুবালাকে বিয়ে করেন। নতুন মায়ের কাছেই নির্মলেন্দুর শিক্ষা শুরু হয়। ১৯৬২ সালে মেট্রিক পরীক্ষার আগেই নেত্রকোণা থেকে প্রকাশিত ‘উত্তর আকাশ’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় নির্মলেন্দু প্রকাশ গুণের প্রথম কবিতা ‘নতুন কান্ডারী’। মেট্রিক পাশের পর তিনি আই.এস.সি পড়তে চলে আসেন ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজে। একই সাথে সুন্দর সাহিত্যিক পরিমন্ডলে তাঁর দিন ভালোই কাটতে থাকা অবস্থা ১৯৬৪ সালে আই.এস.সি পরিক্ষায় অসাধারণ কৃতিত্বের সাথে পাশ করেন। তাঁর বাবা ডাক্তারি পড়তে আগ্রহী হলেও, তিনি চান্স পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগে এবং ভর্তি হোন। হঠাৎ হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা শুরু হলে ঢাকায় দাঙ্গার কারণে তিনি নিজ গ্রামে বাড়িতে আসেন। পরিস্থিতি সাভাবিক হলে ফিরে এসে দেখেন ভর্তি তালিকা থেকে লালকালি দিয়ে কেটে তাকে বাদ দেওয়া হয়! পরে আই.এস.সি-তে ভালো রেজাল্ট করায় তিনি ফার্স্ট গ্রেড স্কলারশিপ পেয়েছিলেন মাসে ৪৫ টাকা। বছর শেষে আরও ২৫০ টাকা। ১৯৬৯ সালে প্রাইভেটে বি.এ. পাশ করেন তিনি, যদিও বি.এ. সার্টিফিকেটটি তিনি তোলেননি। ১৯৬৫ সালে আবার বুয়েটে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। কবিতার পাশাপাশি তিনি গদ্য এবং ভ্রমণকাহিনী লিখেছেন ও ছবি এঁকেছেন। তার কবিতায় মূলত নারীপ্রেম, শ্রেণী-সংগ্রাম এবং স্বৈরাচার বিরোধিতা, এ-বিষয়সমূহ প্রকাশ পেয়েছে। ১৯৭০ সালে প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘প্রেমাংশুর রক্ত চাই’ প্রকাশিত হবার পর জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এ-গ্রন্থের অন্তর্ভূত ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে লেখা হুলিয়া কবিতাটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে এবং পরবর্তীতে এর উপর ভিত্তি করে তানভীর মোকাম্মেল একটি পরীক্ষামূলক চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন। এছাড়াও তার স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো কবিতাটি বাংলাদেশের মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্যপুস্তকে পাঠ্য। তাকে ১৯৮২ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, ২০০১ সালে একুশে পদক এবং ২০১৬ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার দেয়া হয়।