1. mymensinghbdnews24@gmail.com : Mymensinghbdnews24.com : MYMENSINGHBD NEWS24
সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:২২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
শহিদ লেফটেন্যান্ট তানজিম ছারোয়ার নির্জন এর পিতা-মাতার সেনাবাহিনী প্রধানের সাথে সাক্ষাৎ  আজ সারাদিন বৃষ্টির আভাস দিলো আবহাওয়া অফিস অভিযানে গিয়ে সেনা কর্মকর্তা নিহত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করবেন কমিশনপ্রাপ্ত সেনাবাহিনী কর্মকর্তাগণ ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ায় ঘাস কাটতে নিষেধ করায় প্রাণ গেলো এক যুবকের ময়মনসিংহের গৌরীপুর আর্মি ক্যাম্প পরিদর্শন করলেন সেনাবাহিনী প্রধান বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক বন্যার্তদের উদ্ধার ও ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমের অগ্রগতি প্রতিবেদন সাজেকে আটকে পড়া পর্যটকদের উদ্ধার করল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী খাগড়াছড়িতে বন্যা কবলিত অসহায় মানুষের পাশে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী রাজারবাগ পুলিশ স্মৃতিসৌধে মাননীয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার শ্রদ্ধা

১০ জানুয়ারি ১৯৭২ঃ বিজয়ী বাংলার সবুজে ফিরলেন মুক্তির মহানায়ক

  • Update Time : রবিবার, ১০ জানুয়ারী, ২০২১
  • ৪৩৩ Time View

বইছিল স্বাধীনতার সুবাতাস। শ্লোগানে মুখরিত চারদিক, আকাশ-বাতাস, জোর গলায় উচ্চারিত হচ্ছে, “জয় বাংলা”, তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর জুড়ে যেন অনুরণিত হয়ে চলেছে, প্রতিধ্বনিতে একাকার হালকা শীতের আমেজময় সেই ঐতিহাসিক ১০ই জানুয়ারী, ১৯৭২ সাল।বেলা দ্বিপ্রহরের পরপরই হাজার দশেকেরও বেশি সদ্য মুক্তির স্বাদ পাওয়া আবেগে উদ্বেলিত বাঙালি সেখানে জড়ো হয়েছিলেন, যদিও তারা জানতেন জাতির জনক সেখানে এসে পৌঁছবেন বিকেলে।
রুদ্ধশ্বাসে সেখানে প্রতীক্ষায় রয়েছেন সকলেই, প্রতীক্ষায় সেই মহানায়কের, যিনি এই মাটির স্বাধীনতা এনেছেন, যার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আর উদাত্ত আহবানে সকলে নেমেছিলেন মুক্তি ছিনিয়ে আনার যুদ্ধে। শত ত্যাগ তিতিক্ষা, অশ্রুপাত, রক্তপাত, মা-বোনদের সম্ভ্রমের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা এনেছেন সকলে। তার মহানায়ককে নিজ দেশের মাটিতে স্বাগতম জানাতে।
অভ্যর্থনা জানাবার জন্য দাঁড়ানো লাইনে সকলের মুখে উৎকণ্ঠা, অস্থিরতা যারা যুদ্ধ করেছিলেন, গঠন করেছিলেন যুদ্ধকালীন সেই মুজিবনগর সরকার। তরুণ ছাত্রনেতাদের মধ্যেও আবেগাপ্লুত অধীরতা, যাদের সকলের অগাধ দেশপ্রেমের দৃষ্টান্ত যুগ যুগ ধরে জাতির অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। সকলেই তাদের হৃদয়ের বঙ্গবন্ধুকে অভ্যর্থনা জানাতে অপেক্ষায়।
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আসা কমেট বিমানটি যে মুহূর্তে তেজগাঁও বিমানবন্দরে অবতরণ করলো, যেন কোনো জাদুময় কিছু ঘটে গেলো। প্রতীক্ষাধীন লাখো জনতা যেনো অপেক্ষা করে ছিলো অনন্তকালের জন্য, তার সমাপ্তি ঘটলো।
শেষে এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ।
বঙ্গবন্ধু তাঁর নতুন মহিমায় এলেন, এ যেনো, ‘অন্ধকার থেকে আলোর পথে যাত্রা’।
“ভদ্রমহোদয়গণ আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, আমি জীবিত এবং সুস্থ্”, বাংলার সেই নেতা বললেন আনন্দিত স্বরে, নানা মিথ্যা অপপ্রচারের মাধ্যমে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার তাঁকে “পাকিস্তানের বন্দী” হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিল তাঁর বন্দীদশার দিনগুলোতে। তিনি দেশে ফেরার দু’দিন আগে লন্ডনের ক্লারিজেস এ একটি জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন। জানুয়ারীর ৮ তারিখে পাকিস্তানের নতুন নেতা তাকে পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডির চাকালা বিমানবন্দরে বিদায় জানান।
বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে উড্ডয়নের পর, ভুট্টো মন্তব্য করেছিলেন, ‘দ্য নাইটিঙ্গেল হ্যাজ ফ্লোউন’।
অবতরণের পরে বঙ্গবন্ধুকে দেখে মনে হচ্ছিল অনেক ক্লেদাক্ত দীর্ঘ ১০ মাস পাকিস্তানে বন্দীদশায় কাটাবার ক্লান্তির ছাপ। আর উৎসুক জনতার উচ্ছ্বাসে, উল্লাসে আর গগন ফাঁটা জয়োল্লাস ও অভিবাদনে তিনি স্পষ্টতই বিহবল হয়ে পড়েন।
তাঁকে একাত্তরের মার্চে যখন পাকিস্তানে বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হয় সেসময়ের তুলনায় বেশ শীর্ণকায় হয়ে গিয়েছিলেন। এলোমেলো, উস্কোখুস্কো চুল আর মুখে লেগে থাকা অদ্বিতীয় স্মিতহাসি, কপালে লেপ্টে থাকা চুলের মধ্যে তিনি আলতো হাত বুলিয়ে ঠিক করছিলেন। সারা শরীরে অবসাদের চিহ্ন। তবে চোখে দৃঢ় প্রত্যয় আর অদ্ভুত দীপ্তি যা জনতার মনোযোগের কেন্দ্রে।
তিনি কাঁদছিলেন। জনসমক্ষে বা বিশ্ববাসীর সামনে প্রথমবারের মতো ছলছল করে অশ্রুসিক্ত হয়ে তিনি কাঁদছিলেন। বিগত নয় মাসে বাংলাদেশ ও তার জনগণের উপর যে বীভৎস জুলুম, অত্যাচার গিয়েছে তার স্মরণ করে তিনি কাঁদছিলেন।
তাঁর সাথে কাঁদছিল উপস্থিত জনতাও। সাত কোটি জনতা তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে এতদিন শঙ্কিত ছিল। তারা এতদিন কত না প্রার্থনা করেছে আবার নিজেদের মাঝে ফিরে পাবার, নিরাপদে ফিরে আসার জন্য।
এর কয়েক ঘণ্টা আগে, তিনি দিল্লীতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে অভ্যর্থনা লাভ করেন। সাত কোটি বাঙালি প্রত্যক্ষ করলেন তাদের জাতির জনক রেস কোর্স ময়দানের উদ্দেশ্যে রওনা হবার আগে গার্ড অফ অনার পরিদর্শন করলেন। রেসকোর্স সেই ঐতিহাসিক স্থান যেখানে ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হয়েছিল তাঁর অমোঘ ৭ই মার্চের উত্তাল ভাষণ।
বঙ্গবন্ধুকে বহনকারী ট্রাকটি ধীরগতিতে এগিয়ে যাচ্ছিল। বিমানবন্দর থেকে রেসকোর্সের এই স্বল্প দৈর্ঘের রাস্তাঘাট জনমানুষের সমুদ্রে পরিণত হয়েছিল। মানুষের মনে আনন্দ যেন আর ধরে না। প্রতিটি ছাদের উপরে আনন্দিত মুখের প্রতিচ্ছবি — নারী, পুরুষ আর শিশুর। কিশোর-তরুণরা আশেপাশের গাছগুলোতে চড়ে বসেছিল এই জয়োৎসব প্রত্যক্ষ করতে। সবার সংলাপ সীমাবদ্ধ ছিল দুটি সহজ সরল কিন্তু কার্যকর এবং প্রেরণাদায়ক শব্দে।
সেই শীতের সন্ধ্যায়, বঙ্গবন্ধু একাত্তরের মার্চের পরে প্রথমবারের মতো জাতির উদ্দেশ্যে কথা বলেন। জাতি আগ্রহভরে শ্রবণ করে তার প্রাণ থেকে উঠে আসা কথামালা, যা তারা সবসময়ই করেছে। আবেগে তার গলা ধরে আসছিল, তবে তাঁর বাগ্মী প্রকাশে তা কাটিয়ে যাচ্ছিল। আবারও জাতি একাগ্র আর মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনলেন বঙ্গবন্ধুর মোহনীয় বাণী “জয় বাংলা”।

Please Share This Post in Your Social Media

Comments are closed.

More News Of This Category

All rights reserved © 2024 mymensinghbdnews24

Desing & Developed BYServerNeed.com