Mymensingh Bd News24 :
১৯৯৬/১৯৯৭ সালের কথা। প্রথম সন্তানের জন্ম হবে মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের, তাকে দেখতে গেলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি যখন মেয়ের পাশে থাকার জন্য ব্যক্তিগত ওই সফরে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন, আমি তখন বস্টনে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করি।
আমাকে ফোন করে প্রধানমন্ত্রী বললেন,আমরা এতো দিন ধরে আসছি, আপনারা খোঁজটোজ নেন না।’ আমি বললাম, আমাদেরকে রাষ্ট্রদূত বলেছেন যে, আপনাকে বিরক্ত করা যাবে না। আপনি মেয়েকে দেখাশোনার জন্য আসছেন।’ তিনি বললেন, আসেন। তো আমরা গেলাম সেখানে।
কিন্তু সেই অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের নিচে গিয়ে বাঁধল বিপত্তি; কোড নম্বর জানা না থাকায় ঢুকতে পারছিলাম না। বারবার চেষ্টা করায় সময় লাগছিল। তাতে প্রবেশমুখে গাড়ির জট লেগে যায়। এক পর্যায়ে পেছেনের গাড়ি থেকে আমার সাহায্যে এগিয়ে আসেন এক নারী। তিনি এল সালভাদরের নাগরিক।
তিনি এসে আমাকে বলতেছেন, কী হল? বললাম, আমি তো এখানে কোড নম্বর জানি না। তো সে আমাকে নিজের কোড দিয়ে ঢুকিয়ে দিল। এরপর ওই নারীকে ধন্যবাদ জানানোর জন্য থামলাম। অভিবাদনের পর কুশল বিনিময়ও হয়।
তখন সেই নারী জানতে চান, কেন এখানে এসেছেন? আমি বললাম, এই রকম একটা অ্যাপার্টমেন্ট, সেখানে যাব। তিনি বললেন, কেন? তুমি কি ওখানে থাকো? বললাম, না। এখানে আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী আছে। সেখানে যাব।
উত্তর শুনে সেই নারী বিস্মিত হয়েছিলেন। বললেন এখানে প্রধানমন্ত্রী! আমার বাড়ি এল সালভাদরে। আমাদের মন্ত্রীও যখন আসে, তখন রিসোর্টে থাকে, ফাইভ স্টার হোটেলে থাকে। এখানে কীভাবে প্রধানমন্ত্রী থাকে? নো ওয়ে!
আমি তাকে বললাম, উনি আছেন। তখন তিনি বললেন, যে বাসার কথা বলছ, সেটা আমার উল্টোদিকে। এরপর বললেন, একটা কালো গাড়ি দেখছি এখানে, সম্ভবত সিকিউরিটি গাড়ি।
তখন ওই নারী বলেন, তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চান। সেখানে (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে) বললাম যে, আপনাকে একজন দেখতে চায়। প্রধানমন্ত্রী সাথে সাথে তাকে সাক্ষাৎ দিলেন।
সে তো এত ভক্ত হয়ে গেল যে, তৃতীয় বিশ্বের একজন প্রধানমন্ত্রী, যিনি এই রকম সাধারণ বাসায় থাকেন। দুই বেডরুমের। একটাতে তার মেয়ে থাকেন, আরেকটাতে উনি। আরেকটা টিভি রুমের মত ছোট জায়গা। এটা দেখে সে তাজ্জব।
ওইদিন প্রধানমন্ত্রী নিজ হাতে রান্না করেছিলেন। তিনি বললেন, তুমি খেয়ে যাও। এতে সেই নারী আরও অভিভূত হয়ে গেলেন। এটা হলো শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। এই গল্পগুলো অনেকে জানে না। এটা তার ব্যক্তি জীবনের গল্প।
— এ কে আব্দুল মোমেন