গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে ছবি তুলে চাঁদা দাবি, অভিযুক্ত চার যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ
BANGLADESH POLICE MEDIA, PHQ
[26 JUN 2020]
জোর করে বিবস্ত্র করে এক নারীর ছবি তুলে চাঁদা দাবির অভিযোগে চার যুবককে গ্রেপ্তার করেছে ঝিনাইদহ জেলা পুলিশ। ২৫ জুন ২০২০ খ্রিঃ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল অভিযুক্ত ওই চারজনকে গ্রপ্তার করে। অভিযুক্তদের কাছে থেকে আপত্তিকর ওই ভিভিও জব্দ করেছে পুলিশ।
২৫ জুন বিকেলে ভিকটিম ও তাঁর স্বামী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এসে অভিযোগ করেন, বর্তমানে তাঁরা ঝিনাইদহ শহরে একটি বাসায় ভাড়া থাকেন। ভিকটিমের স্বামী পেশায় ইলেকট্রিক মেকানিক। গত ১৮ জুন সন্ধ্যার দিকে তার ইলেকট্রিক কাজের সহকারী এক কিশোরকে দিয়ে বাসায় বাজার পাঠান। ওই সহকারী বাসায় গিয়ে দরজা নক করলে ভিকটিম দরজা খুলে দেন। তখন ওই সহকারীর পেছন পেছন এলাকার বখাটে ও মাদকসেবী সানি মুন্সি(২৩),মোঃ শাওন(২৪),মোঃ মারুফ বিল্লাহ(২৫) ও সোহান(২৫) অতর্কিতে ওই বাসার ভেতরে ঠুকে পড়েন। এ সময় ভিকটিমের মেয়ে পাশের কক্ষে ছিল। অভিযুক্তরা মেয়েকে পাশের কক্ষে আটকে রেখে ভিকটিম ও ওই কিশোরকে নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখান। এরপর ওই চার যুবক সহকারী কিশোরের পোশাক খুলে ভিকটিমের পাশে বসিয়ে ছবি তোলেন। এরপর আরও ‘আপত্তিকর কাজ’ করতে বললে তাতে রাজী না হওয়ায় ওই কিশোরকে মারধর করেন তারা। পরবর্তীতে ওই যুবকেরা ভিকটিমকে ধর্ষণ চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতেও ব্যর্থ হয়ে জোর করে ভিকটিমকে বিবস্ত্র করে ছবি তোলেন ও ভিডিও করেন। এরপর, এসব কথা কাউকে না জানাতে শাসিয়ে যান এবং এসব কথা কাউকে জানালে ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার এবং আরও বড় ধরনের ক্ষতি করার হুমকি দেন।
ভিকটিম ও তাঁর স্বামী আরও বলেন, তারা ওই এলাকায় ভাড়া থাকেন, তাই মান-সম্মানের ভয়ে শুরুতে বিষয়টি কাউকে জানানো থেকে বিরত থাকেন। কিন্তু ঘটনার পর ওই যুবকেরা ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবি শুরু করলে তারা পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেছেন।
এদিকে, গতকাল বিকেল ৫ টার দিকে ভিকটিম ও তাঁর স্বামীর কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়া মাত্রই অভিযুক্তদের ধরতে অভিযানে নামে ঝিনাইদহ জেলা পুলিশ। মাত্র দেড় ঘন্টার মধ্যেই অভিযুক্ত চার যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ সময় ভিকটিমের আপত্তিকর ছবি ও ভিডিওসহ চারটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
ঘটনার বিষয়ে ওই চার যুবকের দেওয়া তথ্য, অনেকদিন ধরেই ভিকটিমকে টার্গেট করেছিলেন তারা। কিন্তু সুযোগ না পেয়ে বাসায় ঢুকতে পারেননি। ঘটনার দিন ওই সহকারী বাজার নিয়ে বাসায় ফেরার পথে তাকে অনুসরণ করেন তারা। সহকারী ঘরে ঢোকার পর দরজা খোলা পেয়ে তারাও বাসার ভেতরে ঢুকে পড়েন। শুরুতে পরিকল্পনা ছিল, ভিকটিম ও সহকারীর আপত্তিকর ছবি তুলে তা দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করা। কিন্তু সহকারী তাতে রাজী না হওয়ার, তারা নিজেরা ধর্ষণের চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে সফল না হয়ে ভিকটিমকে জোর করে বিবস্ত্র করে ছবি তুলে ও ভিডিও করে নেন। কেন এমনটা করেছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে ওই চার অভিযুক্তের উত্তর, মাদকের টাকা সংগ্রহের জন্য চাঁদাবাজি এবং পরবর্তীতে ভিকটিমের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা হাসিলের জন্য এটা করেছেন তারা।
এ ঘটনায় ওই চার যুবকের বিরুদ্ধে মামলা নিয়েছে পুলিশ। এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে এলাকার চিহ্নিত মাদকসেবী ও বখাটেদের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান চালাচ্ছে জেলা পুলিশ।
সর্বদাই জনগণের পাশে, বাংলাদেশ পুলিশ।